চীন কম দামে ভালো জিনিস বিক্রি করা সত্ত্বেও অন্যান্য দেশ তা পারে না কেন?

চীন কম দামে ভালো জিনিস বিক্রি করা সত্ত্বেও অন্যান্য দেশ তা পারে না কেন?


চীন কম দামে ভালো জিনিস বিক্রি করা সত্ত্বেও অন্যান্য দেশ তা পারে না কেন?


আপনি নিশ্চয়ই হুমায়ুন আহমেদের বই পড়েছেন। তার গল্প লিখতে তিনি বাংলা বর্ণমালা (আ, আ, ক, খ) ব্যাবহার করেছেন। বর্ণমালার বাইরে কোন অক্ষর তিনি লেখেননি। তার কোন গল্পে এমন কোন বাংলা শব্দ পেয়েছেন, যেটার অর্থ আপনি জানেন না? তার বইয়ের সকল কথাই আপনার জানা। হুমায়ুন আহমেদের গল্পের সকল অক্ষর আপনি জানতেন, সকল শব্দ আপনি জানতেন - এর পরেও আপনি হুমায়ুন আহমেদের মতন লিখতে পারেন না কেন ?

গল্প লেখা তো অনেক পরের কথা। এই প্রশ্নতে, আপনি মাত্র একটি বাক্য লিখেছেন, সেটাও ভুল। আপনার প্রশ্নে "সত্ত্বেও" কথাটি হবে না। ওখানে হবে "কিন্তু"।


চীন কম দামে ভালো জিনিস বিক্রি করতে পারে, কিন্তু অন্যান্য দেশ তা পারে না কেন?


না, আপনার ভুল ধরা আমার উদ্দেশ্য নয়। আপনাকে দেখাতে চাইছি - সকল উপকরন সাথে থাকলেও, যে কোন জিনিস বানানো যায় না। কোন জিনিস বানাতে হলে প্রয়োজন - ইচ্ছা, পরিকল্পনা ও দক্ষতা। সেই পরিকল্পনা ও দক্ষতা চীনের আছে। তাই ওরা পারে, অন্যান্য দেশ পারে না।

আপনি মেনে নিলেও, অতি-বুদ্ধিমান অনেকে এই কথাটি মানবে না যে, চীনের দক্ষতা বেশী। এই দক্ষতা জিনিসটি বোঝানোর জন্য, আপনাদেরকে সদরুদ্দিন ডাক্তারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।

সদরুদ্দিন ডাক্তার ছিলেন গলির মোড়ে বসে স্বল্প পয়সায় চিকিৎসা করা একজন বৃদ্ধ ডাক্তার। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম ছিল, স্বাধীনতার অনেক আগে, তিনি একটি মেডিকেল ডিপ্লোমা করেছিলেন মাত্র। আমি নিজে ছোট-খাটো রোগের জন্য তার কাছে চিকিৎসা করিয়েছি। তিনি বেশ ভালো চিকিৎসা করতেন। প্রায় বিশ বছর আগে, মারা গেছেন তিনি।

সদরুদ্দিন ডাক্তারের একটি ওষুধের দোকান ছিল, সেখানে বসেই তিনি রোগি দেখতেন। রোগী দেখার জন্য কোন ফী নিতেন না। কিন্তু, অন্য দোকানের চেয়ে তার দোকানে ওষুধের দাম সামান্য বেশী ছিল। আর এভাবেই তার ফী নেওয়া হয়ে যেতো। তার রোগীদের বেশীরভাগই ছিল খুব নিম্ন আয়ের, বস্তিবাসী।

তিনি রোগী দেখে, কয়েকটি ওষুধ বের করে, বলতেন - ৫০ টাকা দাও। রোগী বলল - আমার কাছে ৩০ টাকা আছে। ডাক্তার একটু বিরক্ত হয়ে বলতেন - তোমরা যে কি কর, দেখি কি করা যায়। এর পরে তিনি আবার হিসাব নিকাশ করে, ডোজ কমিয়ে বাড়িয়ে, ওষুধ পরিবর্তন করে, ৩০ টাকা বিল বানিয়ে দিতেন। রোগীর কাছে যদি মাত্র ১০ টাকা থাকতো, তবুও তিনি একটা ব্যাবস্থা করে, সেই ১০ টাকার মধ্যেই ওষুধ দিতেন।

লক্ষ্য করুন, সদরুদ্দিন ডাক্তার কিন্তু তেমন যোগ্যতাসম্পন্ন নয়, তার বড় ডিগ্রী নেই। কিন্তু তাকে নিয়ে আলোচনা করার কারন হল - তিনি যে কোন খরচের ভেতরেই চিকিতসা করতে পারতেন। চীনের যোগ্যতাটাও ঠিক তেমন - তারা যে কোন খরচের মধ্যেই পন্য উৎপাদন করতে পারে।




Post a Comment (0)
Previous Post Next Post